Ticker

100/recent/ticker-posts

তারিখ ও সময়

[ | | ]

আইয়ামের বীজের দিন শুরু/সিয়ামুল বীয ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ (এর সওম)


আজকে ৯ Rabi Al-Akhar, 1440 , 17 December, 2018(সোমবার)
আইয়ামের বীজের দিন শুরুঃ -
(১) আগামি বৃহস্প্রতিবারএর রাত্রিতে সেহরি খেতে হবে-(Rabi Al-Akhar,ইংরেজি-২০/১২/২০১৮,তারিখ) ১৪৪০ হিজরী।শুক্র,শনি, রবিবার পর্যন্ত(অ্যারাবিক ১৩,১৪,১৫তারিখ 
সুতরাং, যারা আইয়ামে বীজের রোযা রাখতে চান তাদেরকে এই শুক্র,শনি, রবিবার - এই তিনদিন রোযা রাখতে হবে। 
(২) এছাড়া বৃহস্পতিবার,ও সোবার সাপ্তাহিক নফল রোযার জন্য উত্তম দিন।  
(৩) মোবাইলের অ্যাাপ্স লিঙ্ক দেওয়া হল সময় সূচি ডাউনলোড করতে পারেন- 

(৪) আইয়ামের বীজের রোযা ও সোমবার ও বৃহস্পতিবারের নফল রোযা সম্পর্কে বিস্তারিত দেওয়া হলো। বড় পোস্ট হলেও আপনারা ছেড়ে দিবেন না। মনোযোগ দিয়ে পড়ুন এবং বিস্তারিত জেনে নিন। দ্বীন শিখা মহান একটি ইবাদত। আল্লাহ আমাদের সবাইকে দ্বীনের সঠিক জ্ঞান দান করুন, আমিন।
__________________________________________
প্রশ্নঃ আইয়ামে বীয কি?
উত্তরঃ চন্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫, এই দিনগুলোকে “আইয়ামে বীয” বা আলোকিত দিনসমূহ বলা হয়। কারণ এই দিনগুলোতে চাঁদ সবচাইতে বেশি আলোকিত থাকে। ইমাম নববী রাহিমাহুল্লাহ বলেন, “আইয়ামে বীজ-এর তিন দিন রোযা রাখা পাকা মুস্তাহাব।”
.
প্রশ্নঃ আইয়ামে বীয-এর দিনগুলোর বিশেষ ফযীলত কি?
উত্তরঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম আইয়ামে বীয-এর তিনদিন নিয়মিত রোযা রাখতেন। তাই মাসের ৩টা রোযার জন্য এই তিন দিনকে বেছে নিলে মুস্তাহাব বা উত্তম কাজ।
(১) আবু দরদা রাদিয়াল্লাহু আ’নহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ “আমার প্রিয় বন্ধু (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে এমন তিনটি কাজের অসিয়ত করেছেন, যা আমি যতদিন বেঁচে থাকব, কখনোই ত্যাগ করব না। সেগুলো হচ্ছে, প্রতি মাসে তিনটি করে রোযা (আইয়ামে বীজ-এর তিন দিন) পালন করা, সালাতুদ দোহার নামায পড়া এবং বিতির না পড়ে ঘুমাতে না যাওয়া।” সহীহ মুসলিমঃ ৭২২, আবু দাউদঃ ১৪৩৩, আহমাদঃ ২৬৯৩৫।
(২) আবু যর রাদিয়াল্লাহু আ’নহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “প্রত্যেক মাসে (নফল) রোযা পালন করলে (শুক্লপক্ষের) ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে পালন করো।” তিরমিযীঃ ৭৬১, নাসায়ীঃ ২৪২৪, হাসান সহীহ শায়খ আলবানী, তাহকীক রিয়াদুস সালেহীন।
(৩) ক্বাতাদাহ ইবনে মিলহান রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ “রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে শুক্লপক্ষের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোযা রাখার জন্য আদেশ করতেন।” আবু দাউদঃ ২৪৪৯, নাসায়ীঃ ২৪৩২।
(৪) আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আ’নহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, “রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বাড়ীতে থাকাবস্থায় অথবা সফরে থাকাবস্থায়, কখনোই আইয়ামে বীযের রোযা ছাড়তেন না।” নাসায়ী ২৩৪৫, শায়খ আলবানীর মতে হাসান সহীহ, তাহকীক রিয়াদুস সালেহীন।
.
প্রত্যেক মাসে তিনটি করে রোযা রাখার ফযীলতঃ
প্রত্যেক মাসে ৩টা করে রোযা রাখলে সারা বছর নফল রোযা রাখার সমান পাওয়া যায়, সুবহা’নাল্লাহ! কারণ, আল্লাহ যেকোনো ভালো কাজের প্রতিদান হিসেবে অন্তত ১০ থেকে ৭০০ গুণ, বা তাঁর রহমত অনুযায়ী চাইলে আরো অনেক বেশি দান করেন। ৩*১০=৩০, এইভাবে প্রত্যেক মাসে ৩টি রোযা রাখলে সারা বছরই নফল রোযা রাখার সমান সওয়াব পাওয়া যাবে, ইন শা’ আল্লাহ।
আ’ব্দুল্লাহ ইবনে আ’মর ইবনে আ’স রাদিয়াল্লাহু আ’নহু হতে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “প্রতি মাসে তিনটি করে রোযা রাখা, সারা বছর ধরে রোযা রাখার সমান।” সহীহুল বুখারীঃ ১১৫৯, ১৯৭৫।
উল্লেখ্য কোনো কারণে আইয়ামে বীজ-এর এই তিন দিন রোযা রাখতে না পারলে, মাসের অন্য যেকোনো ৩দিন রাখলেও ‘সারা বছর রোযা রাখার এই ফযীলত’ পাওয়া যাবে। যাদের ‘কাজা রোজা’ বাকী আছে, তারা সাহরীর সময় শেষ হওয়ার পূর্বেই আইয়ামে বীজের রোযার সাথে ‘আমার ফরজ কাজা’ এই নিয়তও যুক্ত করে নেবেন। কারণ, ফজরের ওয়াক্ত হওয়ার পূর্বেই ‘ফরজ রোজার নিয়ত’ না করলে সেটা ফরজ বলে গণ্য হবেনা, নফল রোজা হিসেবে গণ্য হবে। এতে আশা করা যায়, দুটোর সওয়াব একই সাথে পেয়ে যাবেন ইন শা আল্লাহ।
__________________________________________
নামায ও রোযার নিয়ত কিভাবে করতে হয়? ভিজিট এই লিঙ্ক  
__________________________________________
সোমবার ও বৃহস্পতিবারের ফযীলত নিয়ে দুইটি হাদীসঃ 
(১) সোমবার ও বৃহস্পতিবার এই দুইদিন আল্লাহ তাআলা তাঁর রহমতের উসীলায় সমস্ত মুসলমানদের গুনাহ মাফ করে দেন। তবে এমন দুইজন মুসলমান, যারা পরস্পর সম্পর্ক ছিন্ন করে, যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা এই গুনাহ থেকে তোওবা করে পুনরায় সম্পর্ক স্থাপন করবে, তারা এই ফযীলত থেকে বঞ্চিত থাকবে। আবু হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু আ’নহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, “নাবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোযা রাখতেন। একদিন তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রসূল! আপনি সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোযা রাখেন কেনো? তিনি বললেন, “আল্লাহ তাআ’লা সোমবার ও বৃহস্পতিবার এ দুই দিন প্রত্যেক মুসলমানের গুনাহ ক্ষমা করেন। কিন্তু পরস্পর সম্পর্ক ছিন্নকারী সম্পর্কে (আল্লাহ বলেন): এদেরকে ছেড়ে দাও, যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা নিজেদের মধ্যে সমঝোতা স্থাপন করে।”
সুনানে ইবনে মাজাহঃ ১৭৪০, শায়খ আলবানী রাহিমাহুল্লাহ বলেনঃ “হাদীসটি সহীহ।” সহীহ আত-তারগীবঃ ১০২৮।
(২) সোমবার ও বৃহস্পতিবার এই দুইদিন ‘কেরামান কাতেবীন’ অর্থাৎ, সম্মানিত আমল লেখক ফেরেশতারা আল্লাহর নিকট বান্দার আমল পেশ করেন। এই হাদীসটিও আবু হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু আ’নহু থেকে বর্ণিত হয়েছে। রাসুলু্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “সোমবার ও বৃহস্পতিবার আল্লাহর নিকট বান্দার আমল পেশ করা হয়।। তাই আমি পছন্দ করি যে, রোযা থাকা অবস্থায় যেন আমার আমলনামা (আল্লাহর) কাছে পেশ করা হোক।”
সুনানে তিরমিযীঃ ৭৪৭। শায়খ আলবানী রাহিমাহুল্লাহ হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন, সহীহ আত-তারগীবঃ ১০২৭।

Post a Comment

0 Comments