জানাযা সম্পর্কিত এবং যার শেষ কথা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু’।
১২৩৮. ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যে আল্লাহ্র সঙ্গে শির্ক করা অবস্থায় মারা যায়, সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। আমি বললাম, যে আল্লাহ্র সঙ্গে কোন কিছুর শির্ক না করা অবস্থায় মারা যায়, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (৪৪৯৭, ৬৬৮৩) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১১৫৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১১৬৬)
পরিচ্ছদঃ ২৩/৪. মৃত ব্যক্তির পরিবার-পরিজনের নিকট তার মৃত্যু সংবাদ পৌঁছানো।
১২৪৫. আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নাজাশী যেদিন মারা যান সেদিন-ই আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর মৃত্যুর খবর দেন এবং জানাযার স্থানে গিয়ে লোকদের কাতারবন্দী করে চার তাক্বীর আদায় করলেন। (১৩১৮, ১৩২৭, ১৩২৮, ১৩৩৩, ৩৮৮০, ৩৮৮১, মুসলিম ১১/২১, হাঃ ৯৫১, আহমাদ ২২৬৩৯) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১১৬৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১১৭৩)
পরিচ্ছদঃ ২৩/৩৩. মৃতের জন্য বিলাপ করা মাকরূহ।*
وَقَالَ عُمَرُ t دَعْهُنَّ يَبْكِينَ عَلَى أَبِي سُلَيْمَانَ مَا لَمْ يَكُنْ نَقْعٌ أَوْ لَقْلَقَةٌ وَالنَّقْعُ التُّرَابُ عَلَى الرَّأْسِ وَاللَّقْلَقَةُ الصَّوْتُ
‘উমার (রাঃ) বলেন, আবূ সুলাইমান [খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাঃ)-এর জন্য] তাঁর (পরিবার পরিজনকে) কাঁদতে দাও। যতক্ষণ نُقْعُ(নাক্‘) কিংবা لَقْلَقَةُ (লাকলাকাহ) না হয়। নাক্‘ হল মাথায় মাটি নিক্ষেপ, আর ‘লাকলাকাহ’ হল চিৎকার।
১২৯১. মুগীরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি যে, আমার প্রতি মিথ্যারোপ করা অন্য কারো প্রতি মিথ্যারোপ করার মত নয়। যে ব্যক্তি আমার প্রতি মিথ্যারোপ করে সে যেন অবশ্যই তার ঠিকানা জাহান্নামে করে নেয়। [মুগীরাহ (রাঃ) আরও বলেছেন,] আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে আরও বলতে শুনেছি, যে (মৃত) ব্যক্তির জন্য বিলাপ করা হয়, তাকে বিলাপকৃত বিষয়ের উপর ‘আযাব দেয়া হবে। (মুসলিম ১১/৯, হাঃ ৯৩৩, আহমাদ ১৮২৬৫) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১২০৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১২১৪)
*মৃত ব্যাক্তির জন্য আত্মীয়দের যা করনীয়ঃ
(১) ধৈর্য ধারণ করা ও তাকদীরের উপর সন্তুষ্ট থাকা ও ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন’ বলা। (সূরা আল-বাক্বারাহ ১৫৫-১৫৭)
(২) তার জন্য দু‘আ করা ও তার সামনে উত্তম কথা বলা।
(৩) মৃত্যু সংবাদ দিয়ে মানুষকে এ কথা বলা যে, তোমরা মৃত ব্যক্তির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর।
(৪) যথাশীঘ্র তার জানাযা ও দাফনের ব্যবস্থা করা।
(৫) মৃতের ঋণ থাকলে তা পরিশোধের ব্যবস্থা করা।
মৃত্যুর পর মানুষ যে সব কাজের জন্য উপকৃত হবেঃ মানুষ মারা গেলে তার সমস্ত আমল বন্ধ হয়ে যায় তিনটি আমল ব্যতীত : (১) সে নিজে বা তার পক্ষ থেকে সাদাকায়ে জারিয়া। (২) ইল্ম যার দ্বারা উপকার সাধিত হয়। (৩) সৎ সন্তান যে তার জন্য দু‘আ করতে থাকে। (মুসলিম)
মৃতের জন্য তার কবরে একাকীভাবে দু’হাত তুলে দু‘আ করা জায়িয। [আয়িশাহ্ (রাযি.)-এর হাদীস]
মাসজিদ, মাদ্রাসাহ, মুসাফিরখানা প্রতিষ্ঠা, রাস্তাঘাট, সেতু নির্মাণ, কূপ, খাল, বিল, নহর খনন, কুরআন-হাদীসের কিতাবাদি ক্রয় করে প্রদান এসব কাজ সদাকায়ে জারিয়ার অন্তর্ভুক্ত।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পরিচ্ছদঃ ২৩/৪৬. জানাযার জন্য দন্ডায়মান হওয়া।
১৩০৭. ‘আমির ইবনু রাবী‘আহ (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, তোমরা জানাযা দেখলে তা তোমাদের পিছনে ফেলে যাওয়া পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকবে। হুমাইদী আরও উল্লেখ করেছেন, তা তোমাদের পশ্চাতে ফেলে যাওয়া বা মাটিতে নামিয়ে রাখা পর্যন্ত। (১৩০৮, মুসলিম ১১/২৪, হাঃ ৯৫৮, আহমাদ ১৫৬৮৭) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১২২২, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১২২৯)
পরিচ্ছদঃ ২৩/৪৭. জানাযার জন্য দাঁড়ালে কখন বসবে?
১৩০৮. ‘আমির ইবনু রাবী‘আহ (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, তোমাদের কেউ জানাযা যেতে দেখলে যদি সে তার সহযাত্রী না হয়, তবে ততক্ষণ সে দাঁড়িয়ে থাকবে, যতক্ষণ না সে ব্যক্তি জানাযা পিছনে ফেলে বা জানাযা তাকে পিছনে ফেলে যায় অথবা পিছনে ফেলে যাওয়ার পূর্বে তা (মাটিতে) নামিয়ে রাখা হয়। (১৩০৭) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১২২৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১২৩০)
পরিচ্ছদঃ ২৩/৪৮. যে ব্যক্তি জানাযার পিছে পিছে যায়, সে লোকদের কাঁধ হতে তা নামিয়ে না রাখা পর্যন্ত বসবে না আর বসে পড়লে তাকে দাঁড়াবার নির্দেশ দেয়া হবে।
১৩১০. আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, তোমাদের কেউ যখন কোন জানাযা যেতে দেখবে, যদি সে তার সহযাত্রী না হয় তাহলে সে ততক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবে, যতক্ষণ না তা চলে যায় অথবা নামিয়ে না রাখা হয়। (১৩০৯, মুসলিম ১১/২৪, হাঃ ৯৫৯, আহমাদ ১১১৯৫) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১২২৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১২৩২)
পরিচ্ছদঃ ২৩/৫০.পুরুষরা জানাযা বহন করবে, স্ত্রীলোকেরা নয়।
১৩১৪. আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন জানাযা খাটে রাখা হয় এবং পুরুষরা তা কাঁধে বহন করে নেয়, তখন সে সৎ হলে বলতে থাকে, আমাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাও। আর সৎ না হলে সে বলতে থাকে, হায় আফসোস! তোমরা এটাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছ? মানব জাতি ব্যতীত সবাই তার চিৎকার শুনতে পায়। মানুষ তা শুনলে জ্ঞান হারিয়ে ফেলত। (১৩১৬, ১৩৮০) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১২২৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১২৩৫)
পরিচ্ছদঃ ২৩/৫১. জানাযার কাজ শীঘ্র সম্পাদন করা।
وَقَالَ أَنَسٌ t أَنْتُمْ مُشَيِّعُونَ وَامْشِ بَيْنَ يَدَيْهَا وَخَلْفَهَا وَعَنْ يَمِينِهَا وَعَنْ شِمَالِهَا وَقَالَ غَيْرُهُ قَرِيبًا مِنْهَا
আনাস (রাঃ) বলেন, তোমরা (জানাযাকে) বিদায় দানকারী। অতএব, তোমরা তার সম্মুখে, পশ্চাতে এবং ডানে বামে চলবে। অন্যান্যরা বলেছেন, তার নিকট নিকট (চলবে)।
১৩১৫. আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, তোমরা জানাযা নিয়ে দ্রুতগতিতে চলবে। কেননা, সে যদি পুণ্যবান হয়, তবে এটা উত্তম, যার দিকে তোমরা তাকে এগিয়ে দিচ্ছ আর যদি সে অন্য কিছু হয়, তবে সে একটি আপদ, যাকে তোমরা তোমাদের ঘাড় হতে জলদি নামিয়ে ফেলছ। (মুসলিম ১১/১৬, হাঃ ৯৪৪, আহমাদ ১০৩৩৬) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১২২৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১২৩৬)
পরিচ্ছদঃ ২৩/৫৪. জানাযার সলাতের কাতার।
১৩১৮. আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবীগণকে নাজাশীর মৃত্যু খবর শোনালেন, পরে তিনি সম্মুখে অগ্রসর হলেন এবং সাহাবীগণ তাঁর পিছনে কাতারবন্দী হলে তিনি চার তাকবীরে [1] (জানাযার সালাত) আদায় করলেন। (১২৪৫) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১২৩২, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১২৩৯)
[1] জানাযার সলাত ৪ থেকে ৯ পর্যন্ত তাকবীরে পড়া নাবী (সাঃ) থেকে প্রমাণিত। এবং প্রত্যেক তাকবীর বলার সময় রফউল ইয়াদাইন করতে হবে। এটি ইবনু ‘উমার (রাঃ)-এর আমল- (এটা বাইহাকী সহীহ সনদে বর্ণনা করেছেন- আহকামুল জানায়িয ১৪৮ পৃষ্ঠা)। ৪ থেকে ৯ তাকবীরের যেটাই করবে যথেষ্ট হবে। এক প্রকারকে অপরিহার্যভাবে ধরে রাখতে চাইলে সেটা হল ৪ তাকবীর। কেননা এ ব্যাপারে হাদীসসমূহ শক্তিশালী ও অধিক। (আহকামুল জানায়িয ১৪১ পৃষ্ঠা)
পরিচ্ছদঃ ২৩/৫৬. জানাযার সলাতের নিয়ম।
وَقَالَ صَلُّوا عَلَى صَاحِبِكُمْ وَقَالَ صَلُّوا عَلَى النَّجَاشِيِّ سَمَّاهَا صَلاَةً لَيْسَ فِيهَا رُكُوعٌ وَلاَ سُجُودٌ وَلاَ يُتَكَلَّمُ فِيهَا وَفِيهَا تَكْبِيرٌ وَتَسْلِيمٌ وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ لاَ يُصَلِّي إِلاَّ طَاهِرًا وَلاَ يُصَلِّي عِنْدَ طُلُوعِ الشَّمْسِ وَلاَ غُرُوبِهَا وَيَرْفَعُ يَدَيْهِ وَقَالَ الْحَسَنُ أَدْرَكْتُ النَّاسَ وَأَحَقُّهُمْ بِالصَّلاَةِ عَلَى جَنَائِزِهِمْ مَنْ رَضُوهُمْ لِفَرَائِضِهِمْ وَإِذَا أَحْدَثَ يَوْمَ الْعِيدِ أَوْ عِنْدَ الْجَنَازَةِ يَطْلُبُ الْمَاءَ وَلاَ يَتَيَمَّمُ وَإِذَا انْتَهَى إِلَى الْجَنَازَةِ وَهُمْ يُصَلُّونَ يَدْخُلُ مَعَهمْ بِتَكْبِيرَةٍ وَقَالَ ابْنُ الْمُسَيَّبِ يُكَبِّرُ بِاللَّيْلِ وَالنَّهَارِ وَالسَّفَرِ وَالْحَضَرِ أَرْبَعًا وَقَالَ أَنَسٌ التَّكْبِيرَةُ الْوَاحِدَةُ اسْتِفْتَاحُ الصَّلاَةِ وَقَالَ {وَلاَ تُصَلِّ عَلَى أَحَدٍ مِنْهُمْ مَاتَ أَبَدًا} وَفِيهِ صُفُوفٌ وَإِمَامٌ
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি জানাযার সালাত আদায় করবে.....। তিনি বলেন, তোমরা তোমাদের সঙ্গীর জন্য (জানাযার) সালাত আদায় কর। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একে সালাত বলেছেন, (অথচ) এর মধ্যে রুকূ‘ ও সাজদাহ্ নেই এবং এতে কথা বলা যায় না, এতে রয়েছে তাক্বীর ও তাসলীম। ইবনু ‘উমার (রাঃ) পবিত্রতা ছাড়া (জানাযার) সালাত আদায় করতেন না এবং সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তকালে এ সালাত আদায় করতেন না। (তাক্বীর কালে) দু’ হাত উত্তোলন করতেন। হাসান (বাসরী) (রহ.) বলেন, আমি সাহাবীগণকে এমন অবস্থায় পেয়েছি যে, তাঁদের জানাযার সালাতের (ইমামতের) জন্য তাঁকেই অধিকতর যোগ্য মনে করা হত, যাকে তাঁদের ফরজ সালাতসমূহে (ইমামতের) জন্য তাঁরা পছন্দ করতেন। ঈদের দিন (সালাত কালে) বা জানাযার সালাত আদায় কালে কারো উযূ নষ্ট হয়ে গেলে, তিনি পানি খোঁজ করতেন, তায়াম্মুম করতেন না। কেউ জানাযার নিকট পৌঁছে, লোকদের সালাত রত দেখলে তাক্বীর বলে তাতে শামীল হয়ে যেতেন। ইবনু মুসাইয়িব (রহ.) বলেছেন, দিনে হোক বা রাতে, বিদেশে হোক কিংবা দেশে (জানাযার সালাতে) চার তাক্বীরই বলবে। আনাস (রাঃ) বলেছেন, (প্রথম) এক তাক্বীর হল সালাতের সূচনা। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেছেনঃ ‘‘তাদের (মুনাফিকদের) কেউ মারা গেলে কক্ষণও তার জন্য সালাত (জানাযা) আদায় করবে না’’- (আত্-তাওবাহ ৮৪)। এ ছাড়াও জানাযার সালাতে রয়েছে একাধিক কাতার ও ইমামতের বিধান।
১৩২২. শা‘বী (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এমন এক সাহাবী আমাকে খবর দিয়েছেন, যিনি তোমাদের নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সঙ্গে একটি পৃথক ক্ববরের পার্শ্ব দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) ইমামত করলেন, আমরা তাঁর পিছনে কাতারবন্দী [1] হলাম এবং সালাত আদায় করলাম। [শাইবানী (রহ.) বলেন,] আমরা (শা‘বীকে) জিজ্ঞেস করলাম, হে আবূ ‘আমর! আপনাকে এ হাদীস কে বর্ণনা করেছেন? তিনি বললেন, ইবনু ‘আববাস (রাঃ)। (৮৫৭) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১২৩৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১২৪৩)
[1] জানাযার সলাতে তিন বা তার অধিক কাতার করা উত্তম এবং তিন কাতারের ফযীলতও বর্ণিত হয়েছে। (আহকামুল জানায়িয ১২৭-১২৮ পৃষ্ঠা, আলবানী)
পরিচ্ছদঃ ২৩/৫৮. দাফন হয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা।
১৩২৫. আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি মৃতের জন্য সালাত আদায় করা পর্যন্ত জানাযায় উপস্থিত থাকবে, তার জন্য এক কীরাত, আর যে ব্যক্তি মৃতের দাফন হয়ে যাওয়া পর্যন্ত উপস্থিত থাকবে তার জন্য দু’ কীরাত। জিজ্ঞেস করা হল দু’ কীরাত কী? তিনি বললেন, দু’টি বিশাল পর্বত সমতুল্য (সাওয়াব)। (৪৭, মুসলিম ১১/১৭, হাঃ ৯৪৫, আহমাদ ৯২১৯) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১২৩৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১২৪৫)
পরিচ্ছদঃ ২৩/৬০. মুসল্লা (ঈদগাহ বা নির্ধারিত স্থানে) এবং মাসজিদে জানাযার সলাত আদায় করা।
১৩২৭. আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নাজাশীর মৃত্যুর দিনই আমাদের তাঁর মৃত্যু খবর জানান এবং ইরশাদ করেনঃ তোমরা তোমাদের ভাই-এর (নাজাশীর) জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর। [1] (১২৪৫) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১২৪০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১২৪৭)
[1] মৃতের জানাযা এবং দাফনের পর আল্লাহর রসূল (সাঃ) এ মৃত্যুর খবর অবহিত হয়ে সাহাবায়ে কেরামসহ আরেক দফা মৃতের জানাযার সলাত আদায় করেছেন। এ হাদীসগুলো প্রমাণ করে সে মৃতের জন্য একাধিক জানাযার সলাত জায়িয। মৃতের কবরের নিকটেই হোক বা দূরবর্তী স্থানেই হোক। নাবী (সাঃ) নাজাশীর গায়েবানা জানাযা পড়েছিলেন। গায়েবানা জানাযার বৈধতার এটাই দলীল।
পরিচ্ছদঃ ২৩/৬৩. মহিলা ও পুরুষের (জানাযার সলাতে) ইমাম কোথায় দাঁড়াবেন?
১৩৩২. সামুরাহ ইবনু জুনদাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর পশ্চাতে আমি এমন এক স্ত্রীলোকের জানাযার সালাত আদায় করেছিলাম, যে নিফাস* অবস্থায় মারা গিয়েছিলেন। তিনি তার (স্ত্রীলোকটির) মাঝ বরাবর দাঁড়িয়েছিলেন। (৩৩২) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১২৪৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১২৫১)
* প্রসূতি মহিলার প্রসব পরবর্তী রক্তস্রাবকে আরবীতে নিফাস বলা হয়।
পরিচ্ছদঃ ২৩/৬৪. জানাযার সলাতে তাকবীর চারটি।
وَقَالَ حُمَيْدٌ صَلَّى بِنَا أَنَسٌ t فَكَبَّرَ ثَلاَثًا ثُمَّ سَلَّمَ فَقِيلَ لَهُ فَاسْتَقْبَلَ الْقِبْلَةَ ثُمَّ كَبَّرَ الرَّابِعَةَ ثُمَّ سَلَّمَ
হুমাইদ (রহ.) বলেন, আনাস (রাঃ) একবার আমাদের নিয়ে (জানাযার) সালাত আদায় করলেন, তিন বার তাক্বীর বললেন, অতঃপর সালাম ফিরালেন। এ ব্যাপারে তাঁকে জানানো হলে, তিনি কিব্লামুখী হয়ে চতুর্থ তাক্বীর দিলেন, অতঃপর সালাম ফিরালেন।
১৩৩৩. আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নাজাশীর মৃত্যুর দিন তাঁর মৃত্যু খবর জানালেন এবং সাহাবীবর্গকে সঙ্গে নিয়ে জানাযার সালাতের স্থানে গেলেন এবং তাদেরকে সারিবদ্ধ করে চার তাক্বীরে জানাযার সালাত আদায় করলেন। (১২৪৫) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১২৪৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১২৫২)
পরিচ্ছদঃ ২৩/৬৫. জানাযার সলাতে সূরা ফাতিহা পাঠ করা।
وَقَالَ الْحَسَنُ يَقْرَأُ عَلَى الطِّفْلِ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ وَيَقُولُ اللَّهُمَّ اجْعَلْهُ لَنَا فَرَطًا وَسَلَفًا وَأَجْرًا
হাসান (রহ.) বলেছেন, শিশুর জানাযার সালাতে সূরা ফাতিহা তিলাওয়াত করবে এবং দু‘আ পড়বে। হে আল্লাহ্! তাকে আমাদের জন্য অগ্রে প্রেরিত, অগ্রগামী এবং আমাদের পুরস্কার স্বরূপ গ্রহণ কর।
১৩৩৫. ত্বলহাহ্ ইবনু ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘আওফ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ইবনু ‘আববাস (রাঃ)-এর পিছনে জানাযার সালাত আদায় করলাম। তাতে তিনি সূরা ফাতিহা পাঠ করলেন [1] এবং (সালাত শেষে) বললেন, (আমি সূরা ফাতিহা পাঠ করলাম) যাতে লোকেরা জানতে পারে যে, এটা সুন্নাত। (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১২৪৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১২৫৪)
[1] একদল লোক বলেন, সলাতে জানাযায় রুকুও নেই, সাজদাহও নেই, ফলে তা তাওয়াফের অনুরূপ। তাওয়াফ বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য সূরা আল-ফাতিহা পাঠের প্রয়োজন হয় না, ঠিক তেমনি সলাতে জানাযাও বিশুদ্ধ হবার জন্য সূরা ফাতিহা পাঠের কোন দরকার হয় না। এটা সুস্পষ্ট সহীহ হাদীসের মোকাবিলায় নিছক মনগড়া কিয়াস-যা সম্পূর্ণ নাজায়িয। তালহা বিল আবদুল্লাহ বিন আউফ (রাঃ) বর্ণিত বুখারীর উল্লিখিত হাদীস ছাড়াও সুনানে নাসায়ী ইত্যাদি গ্রন্থে সলাতে জানাযায় সূরা ফাতিহা পাঠের স্বপক্ষে আরও হাদীস রয়েছে। সুনানে নাসায়ীর হাদীসটি ‘উসমান (রাঃ) হতে বর্ণিত। এ হাদীস সম্পর্কে আল্লামাহ শাইখ উবাইদুল্লাহ রাহমানী তাঁর মিশকাতের বিখ্যাত ভাষ্যগ্রন্থ ‘মিরআতুল মাফাতীহ’-তে মন্তব্য করেছেন- নাসায়ীতে বর্ণিত আবূ উমামাহর হাদীসটির সূত্র বুখারী ও সহীহ মুসলিমের হাদীসের শর্ত ভিত্তিক। হাদীস শাস্ত্রের মহাপন্ডিত হাফিয ইবনু হাজার আসকালানী এ হাদীস সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন- হাদীসটির বর্ণনা সূত্র বিশুদ্ধ। আল্লামাহ রাহমানী বলেছেন- বাস্তব ও যথার্থ কথা এই যে, সলাতে জানাযায় সূরা ফাতিহা পাঠ ওয়াজিব। ইমাম শাফিয়ী, ইমাম আহমাদ, ইমাম ইসহাক (রহঃ) প্রমুখ আয়িম্মায়ে দ্বীন এ বিষয়ে একমত যে, জানাযা অনুষ্ঠানটি সলাতের অন্তর্ভুক্ত আর এটা সুপ্রমাণিত যে, সূরা ফাতিহা ব্যতীত কোন সলাতই সহীহ হয় না। হাদীসের এই ব্যাপকতা সাধারণভাবে সকল সলাতের উপর প্রযোজ্য হবে। সলাতে জানাযায় সূরা ফাতিহা পাঠ না করার স্বপক্ষে মুসনাদে আহমাদে বর্ণিত রিওয়ায়াতটি পেশ করা হয়, যার অর্থ হলঃ ইবনু মাসউদ (রাঃ) বলেছেন, আমাদের পক্ষে মাইয়্যিতের জানাযায় কোন কিরা‘আত ও কাওল নির্ধারণ করা হয়নি। অর্থাৎ সলাতে জানাযায় কিরা‘আতের স্থান বা সময়সূচী নির্ধারণ করে দেয়া হয়নি। এ সম্পর্কে আল্লামাহ রাহমানী বলেন, এ রিওয়ায়াতটি কিরা‘আত পাঠ না করা প্রমাণ করে না। তাছাড়া ইবনু মাসউদ থেকেই পরিষ্কার রিওয়ায়াত আছে, তিনি সলাতে জানাযায় সূরা ফাতিহা পাঠ করেছেন। হানাফী মাযহাবের প্রখ্যাত ফাক্বীহ হাসানসার নাবলালী তাঁর রচিত ‘‘আল নাজমুল মুস্তাতাব লি হুকমিল রিফাতে ফি সালাতিল জানাযাতে বে উম্মিল কিতাব’’ নামক গ্রন্থে প্রমাণ করে দেখিয়েছেন যে, সলাতে সূরা ফাতিহা পাঠ না করার চেয়ে ফাতিহা পাঠ করা বহুগুণে উত্তম। আল্লামাহ আবদুল হাই লাক্ষ্ণৌবী হানাফী তাঁর শরহে বিকায়ার ভাষ্য উমদাতুর রিয়ায়া গ্রন্থে লিখেছেন, সলাতে জানাযায় সূরা ফাতিহা পাঠ বিষয়ে ইমাম আবূ হানীফার সিদ্ধান্তের চেয়ে ইমাম শাফিয়ীর সিদ্ধান্তই দলীল হিসেবে অনেক মজবুত। আমাদের হানাফী ফকীহমন্ডলীর আল্লামাহ সার নাবলালী ইমাম শাফিয়ীর ফতওয়া পছন্দ করেছেন। কেননা আবূ উমামাহ বলেছেন, জানাযার সলাতে সূরা ফাতিহা পাঠ নাবী -এর নির্ধারিত বিধান- (উমদাতুর রিয়ায়া ১ম খন্ড ১৮৯ পৃষ্ঠা)। কাযী সানাউল্লাহ পানিপথী জীবনের অন্তিমকালে বহু বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন ও পুত্র পরিজনের সামনে শক্তভাবে অসিয়ত রাখেন যে, আমার সলাতে জানাযায় যেন বিপুল মুসল্লীবৃন্দের সমাবেশ ঘটে, আর মুহাম্মাদ আলী অথবা হাকীম সুখয়া অথবা পীর মুহাম্মাদ আমার জানাযায় পেশ ইমাম হন। বায়াদা তাকবীরে উলা সূরা ফাতিহা হাম খোয়াননদ। (অর্থাৎ তারা যেন প্রথম তাকবীরের পর সূরা আল-ফাতিহাও পাঠ করেন- (মালাবুদ্দা মিনহু)। মাওলানা আশরাফ আলী থানবীর মহাগুরু মাওলানা রশীদ আহমাদ গাঙ্গুহী এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন- ইমাম সাহেব (রহঃ) জানাযার সলাতে কিরা‘আতের নিয়তে কুরআন পাঠ নিষেধ করেছেন, তা দু‘আর নিয়তে পাঠ করলে দোষ নেই। অতঃপর তিনি বলেন, যদি কিরা‘আতের নিয়তেও পাঠ করা হয় তাহলেও গুনাহগার হবে না। কেননা হাদীস বিশারদ মুহাদ্দিসমন্ডলীর ও ইমাম শাফিয়ীর গবেষণা মতে সলাতে জানাযায় সূরা ফাতিহা পাঠ রসূলুল্লাহ -এর বিধান। কাজেই গুনাহগারও হবে না- (ফাতওয়া রাশিদীয়া কামিল ২৫৮ পৃষ্ঠা)।
হানাফী ইমাম মুল্লা আলী ক্বারী বলেন, সলাতে জানাযায় দু‘আর নিয়তে সূরা ফাতিহা পাঠ মুস্তাহাব। এতে ইমাম শাফিয়ীর শক্ত দলিল ভিত্তিক অভিমতের বিরোধিতা থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে- (রাদ্দুল মুহতার)।
বড় পীর সাহেব তাঁর বিশ্ব বিশ্রুত গুনিয়াতুত তালেবীনে লিখেছেন- সলাতে জানাযায় তাকবীর বলবে প্রথম তাকবীরের পর সূরা ফাতিহা পাঠ করবে। কেননা ‘আবদুল্লাহ বিন ‘আববাস (রাঃ) বলেছেন- আল্লাহর রসূল আমাদের নির্দেশ দান করেছেন, সলাতে জানাযায় যেন সূরা ফাতিহা পাঠ করা হয়। অতঃপর দ্বিতীয় তাকবীরের পর সলাতের তাশাহ্হুদের মত যেন নাবীর প্রতি দরূদ পাঠ করা হয়, কেননা তাবিয়ী ইমাম মুজাহিদ বলেছেন, আমি আল্লাহর রসূল -এর অষ্টাদশ সহচরকে সলাতে জানাযা বিষয়ে জিজ্ঞেস করেছি, তাঁরা সকলেই বলেছেন, তুমি তাকবীর উচ্চারণ করবে, তারপর সূরা আল-ফাতিহা পাঠ করবে। আবার তুমি তাকবীর ধ্বনি উচ্চারণ করে নাবী -এর প্রতি দরূদ পড়বে। অতঃপর আল্লাহু আকবার বলে তোমার পছন্দমত মাইয়্যিত ব্যক্তির উদ্দেশে দু‘আ আবৃত্তি করবে- (গুনিয়াতুত তালেবীন- উর্দু অনুবাদ সহ ১০৫ পৃষ্ঠা)। ইমাম ও মুজতাহিদমন্ডলীর শিরোমণি শাহ ওয়ালিউল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলভী লিখেছেন- সলাতে জানাযার বিধানসমূহের মধ্যে সূরা ফাতিহা পাঠও একটি বিধান। যেহেতু সূরা ফাতিহা সর্বাপেক্ষা উত্তম ও সবচাইতে পূর্ণাঙ্গ দু‘আ যা খোদ আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দাগণকে স্বীয় পবিত্র কিতাবে শিক্ষাদান করেছেন- (হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগা- উর্দু অনুবাদ সহ ১২৩ পৃষ্ঠা)।
জানাযার সলাতে সানা পাঠ করার প্রমাণ পাওয়া যায় না এবং আলবানী এটি বিদ‘আত হিসেবে চিমিত করেছেন। (আহকামুল জানায়িয- বিদ‘আত নং- ৭৬, পৃষ্ঠা ৩১৬)
পরিচ্ছদঃ ২৩/৮৪. মুনাফিকদের জন্য (জানাযার) সলাত আদায় করা এবং মুশরিকদের জন্য মাগফিরাত কামনা করা অপছন্দনীয় হওয়া।
رَوَاهُ ابْنُ عُمَرَ عَنْ النَّبِيِّ
(‘আবদুল্লাহ্) ইবনু ‘উমার (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বিষয়টি রিওয়ায়াত করেছেন।
১৩৬৬. ‘উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, (মুনাফিক সর্দার) ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘উবাই ইবনু সালূল মারা গেলে তার জানাযার সালাতের জন্য আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে আহবান করা হল। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (সালাত আদায়ের উদ্দেশে) দাঁড়ালে আমি দ্রুত তাঁর নিকট গিয়ে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল্! আপনি ইবনু ‘উবাই’র জানাযার সালাত আদায় করতে যাচ্ছেন? অথচ সে অমুক অমুক দিন (আপনার শানে এবং ঈমানদারদের সম্পর্কে) এই এই কথা বলেছে। এ বলে আমি তার উক্তিগুলো গুণেগুণে পুনরাবৃত্তি করলাম। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুচকি হাসি দিয়ে বললেন, ‘উমার, সরে যাও! আমি বারবার আপত্তি করলে তিনি বললেন, আমাকে (তার সালাত আদায় করার ব্যাপারে) ইখ্তিয়ার দেয়া হয়েছে। কাজেই আমি তা গ্রহণ করলাম। আমি যদি জানতাম যে, সত্তর বারের অধিক মাগফিরাত কামনা করলে তাকে মাফ করা হবে তা হলে আমি অবশ্যই তার চেয়ে অধিক বার মাফ চাইতাম। ‘উমার (রাঃ) বলেন, অতঃপর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জানাযার সালাত আদায় করেন এবং ফিরে আসেন। এর কিছুক্ষণ পরেই সূরা বারাআতের এ দু’টি আয়াত নাযিল হল :
{وَلا تُصَلِّ عَلَى أَحَدٍ مِنْهُمْ مَاتَ أَبَداً وَلا تَقُمْ عَلَى قَبْرِهِ إِنَّهُمْ كَفَرُوا بِاللهِ وَرَسُولِهِ وَمَاتُوا وَهُمْ فَاسِقُونَ} (التوبة:৮৪)
‘‘তাদের কেউ মারা গেলে আপনি কখনো তার জানাযার সালাত আদায় করবেন না। এমতাবস্থায় যে তারা ফাসিক- [আত্তাওবাহ ৯ : ৮৪]। রাবী বলেন, আল্লাহর রাসূল-এর সামনে আমার ঐ দিনের দুঃসাহসিক আচরণ করায় আমি বিস্মিত হয়েছি। আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূলই সমধিক অবগত। (৪৬৭১) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১২৭৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১২৮২)
পরিচ্ছদঃ ২৩/৮৬. ক্ববরের ‘আযাব সম্পর্কে যা কিছু বর্ণিত হয়েছে।
১৩৭০. ইবনু ‘উমার (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (বদরে নিহত) গর্তবাসীদের দিকে ঝুঁকে দেখে বললেনঃ ‘‘তোমাদের সাথে তোমাদের রব যে ওয়াদা করেছিলেন, তা তোমরা বাস্তবে পেয়েছো তো?’’- (আল-আ‘রাফ (৭) : ৪৪)। তখন তাঁকে বলা হল, আপনি মৃতদের ডেকে কথা বলছেন? (ওরা কি শুনতে পায়?) তিনি বললেনঃ ‘‘তোমরা তাদের চেয়ে অধিক শুনতে পাও না, তবে তারা জবাব দিতে পারছে না’’। [1] (৩৯৮০, ৪০২৬) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১২৭৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১২৮৭)
[1] ক্ববরবাসীকে সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা নাবী (সাঃ)ও কোন কিছু শুনানোর ক্ষমতা রাখেন না তবে মহান আল্লাহ তাওফীক দিলে সম্ভব। বর্ণিত অবস্থা তারই দৃষ্টান্ত।
আল্লাহ্ তা‘আলা ঘোষণা করেছেনঃ ‘‘আপনি (হে নাবী!) নিশ্চিতই মৃতদের (কোন কথা) শোনাতে পারেন না’’- (আন্-নামালঃ ৮০)। (৩৯৭৯, ৩৯৮১, মুসলিম ১১/৯, হাঃ ৯৩২) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১২৮০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১২৮৮)
0 Comments