Ticker

100/recent/ticker-posts

তারিখ ও সময়

[ | | ]

মারেফুল কুরআন নামক তাফসীর


মারেফুল কুরআন নামক তাফসীর

মারেফুল কুরআন নামক তাফসীর
প্রশ্ন (২১/১৪১) : তাফসীর মা‘আরেফুল কুরআন নামক তাফসীরটি কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে প্রণীত কি?
-আব্দুল্লাহিল কাফী, ছোটবনগ্রাম, রাজশাহী।
উত্তরঃ এ তাফসীরে কিছু ভ্রান্ত আক্বীদা ও আমল এবং বহু স্থানে ভুল তাফসীরের সমাবেশ ঘটেছে। ফলে একে বিশুদ্ধ তাফসীর বলা যায় না। এর মধ্যে উল্লেখিত ভুলগুলোর কিছু দৃষ্টান্ত পেশ করা হলঃ
(১) ‘নবী’ বা ‘ওলী’র বরাত দিয়েও আল্লাহ তা‘আলার সাহায্য প্রার্থনা করা কুরআনের নির্দেশ ও হাদীছের বর্ণনায় বৈধ প্রমাণিত হয়েছে’ (পৃঃ ৯,৩২৭)। অথচ মৃত নবী বা অন্য কারুর অসীলা দিয়ে প্রার্থনা করা স্পষ্ট শিরক (মুসলিম হা/২০৪;মিশকাত হা/৫৩৭৩)
(২) ‘সৃষ্ট জগতের মাঝে সর্বপ্রথম রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নূর সৃষ্টি করা হয়েছে’... এক হাদীছে বলা হয়েছে, আল্লাহ তা‘আলা সর্বপ্রথম আমার নূর সৃষ্টি করেছেন’ (পৃঃ ৪২৮)। অথচ এটি সম্পূর্ণ ভুল আক্বীদা এবং হাদীছটি জাল (ছহীহাহ হা/৪৫৮-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য)।
(৩) ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাঁর পবিত্র রওজা শরীফে জীবিত আছেন।... এ কারণই তাঁর পরিত্যক্ত সম্পত্তি বণ্টন করা হয়নি এবং এর ভিত্তিতেই তাঁর পত্নীগণের অবস্থা অপরাপর বিধবা নারীদের মত হয়নি’ (পৃঃ ১০৯৩)। অথচ ‘হায়াতুন্নবী’-র এই আক্বীদা পরিষ্কার শিরকী আক্বীদা (যুমার ৩০)
(৪) ‘কোন না কোন একজন মুজতাহিদ ইমামের তাক্বলীদ করা অপরিহার্য। সকল মুজতাহিদ ইমামই সত্য’ (পৃঃ ৭৪৩)। অথচ কুরআন ও সুন্নাহর অনুসরণই কেবল অপরিহার্য এবং মুজতাহিদ ইমামগণ ভুলের ঊর্ধ্বে নন
(৫) ‘আল্লাহ তা‘আলার কোন আকার নেই’ (পৃঃ ১৪৬৫)। অথচ কুরতুবী স্বীয় তাফসীরে অন্যের মন্তব্য উদ্ধৃত করেছেন এভাবে যে, ‘আমরা মানুষকে সর্বোত্তম অবয়বে সৃষ্টি করেছি’। এর অর্থ অনেকে করেছেন علي صورة الرحمن ‘আল্লাহর আকৃতিতে’। অথচ আল্লাহর বাস্তব আকার (صورةمةشخصة) কোথায় আছে ভাবার্থ ব্যতীত? (ঐ,২০/১১৪)’। এ বিষয়ে সঠিক আক্বীদা হ’ল এই যে,আললাহর আকার আছে। কিন্তু তার তুলনীয় কিছুই নেই (শূরা ১১)।
(৬) ‘এলমে তাছাউফও ফরযে আইনের অন্তর্ভুক্ত’(পৃঃ ৫৯৬)। অথচ দ্বীনী ইলম হাছিল করা ফরয। ইসলামের সকল ইবাদতের মূল উদ্দেশ্য হ’ল তাযকিয়ায়ে নাফ্স বা আত্মশুদ্ধি। পৃথকভাবে ইলমে তাছাউওফের কোন অস্তিত্ব শরী‘আতে নেই। বরং কথিত ছুফীবাদের চোরাগলি দিয়েই মুলমানদের মধ্যে অধিকাংশ শিরক প্রবেশ করেছে
(৭) অনুরূপভাবে সূরায়ে ‘মুহাম্মাদ’ ৩৮ আয়াতের ব্যাখ্যায় ইমাম সৈয়ূতীর বরাতে বলা হয়েছে যে,‘আলোচ্য আয়াতে ইমাম আবু হানীফা ও তাঁর সহচরদেরকে বুঝানো হয়েছে। কেননা তাঁরা পারস্য সন্তান। কোন দলই জ্ঞানের সেই স্তরে পৌঁছেনি, যেখানে আবু হানীফা ও তাঁর সহচরগণ পৌঁছেছেন’ (পৃঃ ১২৬৩)।
এমনিভাবে অসংখ্য শিরকী আক্বীদা ও বিদ‘আতী আমলের প্রচারণা চালানো হয়েছে অত্র তাফসীর গ্রন্থে। অতএব কেউ পড়তে চাইলে জ্ঞান-বিবেক জাগ্রত রেখেই এ তাফসীর পড়তে হবে। কেননা তার মধ্যে অনেক শিক্ষণীয় বিষয় ও রয়েছে।

Post a Comment

0 Comments