📌মুতাজিলা #ডা.মতিয়ারের আকিদা কি?তা ফাশ করে দিলেন:-শাইখ আকরামুজ্জামান মাদানী।
#কে এই প্রফেসর ডাঃ মতিয়ার রহমান?
দীর্ঘদিন থেকেই প্রফেসর ডাঃ মতিয়ার রহমান সাহেবের আক্বীদা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করছিলাম। বিশেষ করে তার ছোট চটি বইগুলো আমাদের মধ্যে বেশ সমাদৃত। তিনি আবার বাংলাভিশনে কুরআন বিষয়ক প্রোগ্রামও করেন। হঠাৎ একদিন তার একটি পুস্তকে একটি মারাত্মক লেখা আমার চোখে পড়েছিল। তখন ফেসবুকে এটা নিয়ে লিখেছিলাম। অনেকেই তখন ব্যাপারটা স্বীকার করেছিলেন।
প্রফেসর ডাঃ মতিয়ার রহমানের আক্বীদা ও মানহাজ সম্পর্কে যা জানতে পারলাম তা নিম্নরূপঃ
***তিনি হাদীছের সনদ বা শুদ্ধাশুদ্ধি নির্ণয়ের পদ্ধতিকে অস্বীকার করেন। তার মতে হাদীছের মতন বা টেক্সটই আসল। উনার দৃষ্টিতে অনেক সহীহ হাদীছ কুরআনের বিপরীত হতে পারে আবার অনেক যঈফ হাদীছ কুরআনের অনুকূলে হতে পারে! সেক্ষেত্রে হাদীছের মতন কুরআনের সাথে মিলিয়ে দেখতে হবে। মিললে আমল করতে হবে নতুবা বর্জন করতে হবে। [অথচ কুরআন ও হাদীছ কখনোই পরস্পর বিপরীত হতেই পারে না] এ ব্যাপারে তিনি অনেকটা মু'তাজিলা বা বুদ্ধিভিত্তিক দর্শনের অনুসারী।
***তিনি শাফায়াত অস্বীকার করেন। তার মতে কেউ একবার জাহান্নামে গেলে সে আর কখনো তা থেকে বের হবে না।
***তার মতে কবীরা গুনাহগার চিরস্হায়ী জাহান্নামী। এ ব্যাপারে তিনি খারেজী আক্বীদার অনুসারী।
ঈমান-আক্বীদার ক্ষেত্রে তার এ ধরণের ভয়াবহ বিচ্যুতি নিঃসন্দেহে পূর্ববর্তী ওলামাদের মানহাজ গ্রহণ না করে নিজে নিজে গবেষণা করার ফসল। দুঃখ লাগে, তার ব্যাপারে অনেকেই জানে না; লাইব্রেরীগুলোতে তার বই দেদারসে বিক্রি হচ্ছে। আশা করি আমাদের দেশের আলেম ও তালিবুল ইলমগণ তার ব্যাপারে জাতিকে সতর্ক করবেন।
#মুতাজিলা কারা.......
==========================
#মুতাজিলা দের ভ্রান্ত মতবাদ :
মুতাজিলারা যে সমস্ত বিভ্রান্তির মধ্যে রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ইসলামের দু’টি মূলনীতি কুরআন ও সহীহ হাদীসের দলীলের উপর মানুষের বিবেক-বুদ্ধিকে প্রাধান্য দেওয়া।
তাদের কিতাবগুলোতেই সুস্পষ্টভাবে উক্ত কথাটি উল্লেখ আছে।একটি কিতাব نداء حار إلى المسلمين من حزب التحرير এ বলা হয়েছে, ইসলামের প্রকৃত রূপ হচ্ছে, তা চিন্তা ও গবেষণার ফলাফল সমূহ। এ জন্যই অহীর মাধ্যমে যা কিছু এসেছে, তার প্রতিটির মধ্যেই বিবেক ও চিন্তাকে কাজে লাগাতে হবে। ইসলাম এমন চিন্তা ও গবেষণার ফল যার ভিত্তি হচ্ছে মানুষের বিবেক। কিতাবটির লেখক আরও বলেনঃ বিবেক দিয়েই ইসলামকে বুঝতে হবে। সঠিক কথা হচ্ছে ইসলাম বিবেকের অধিনস্ত। আর যদি বলা হয় ইসলামকে মাপার যন্ত্রও হল আকল বা বিবেক, তাও ঠিক হবে। কারণ বিবেকই হচ্ছে ইসলামের মূল। সুতরাং আকল বা বিবেক-বুদ্ধি যেটা বলে সেটাই ইসলামের দলীল। কোররআনের আয়াত বা হাদীস নয়।
আহলে সুন্নাহ এর সকল ইমামের মতে ইসলামের মূল ভিত্তি হচ্ছে আল্লাহর কিতাব ও রাসূল সা: এর সুন্নাত; মানুষের বিবেক-বুদ্ধি নয়। মানুষের বিবেক ও বুদ্ধি যদি কুরআন ও হাদীসের কোন তথ্য ও রহস্য বুঝতে সক্ষম হয় তাহলে তো ভালই। আর কোন বিষয়ের বা হুকুমের রহস্য বিবেক দ্বারা বুঝতে না পারলেও তা বিশ্বাস করা জরুরী। এমন কি কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত কোন মাসআলা মানুষের বিবেকের বিরোধী হলে বিবেক প্রসুত কথা বাদ দিয়ে কুরআন ও হাদীসের কথাই মেনে নিতে হবে। কারণ কুরআন ও হাদীসের বাণী ভুলের উর্ধে। আর মানুষের জ্ঞান ও বুদ্ধি ভুলের উর্ধে নয়। বিবেককে কুরআন ও হাদীছের দলীলের উপর প্রাধান্য দেওয়াই এদের মতবাদ ।
এটি অত্যন্ত বিভ্রান্তিকর একটি কথা। এর মাধ্যমে মুতাযেলা সম্প্রদায় দ্বীনের অনেক বিষয় অস্বীকার করেছেন।
#ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রাহঃ) এর উপর অত্যাচারের ঘটনা :
সমসাময়িক কালের ধর্মীয় নেতারা খলিফার রোষানল থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য একে একে খলিফার দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিই সমর্থন দিতে শুরু করেন; কিন্তু ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ.) মুতাজিলা মতবাদকে ভ্রান্ত বলে তা মানতে অস্বীকার করেন এবং এ জন্য নির্মম নির্যাতন ও কারাযন্ত্রণা ভোগ করেন। পবিত্র কোরআন ‘সৃষ্টি’ এ সম্পর্কে মুতাজিলা মতবাদের অন্যতম প্রবক্তা আব্বাসীয় খলিফা মামুন-অর-রশীদ তাঁর বিরোধিতাকারী ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বলকে তলব করে জিজ্ঞেস করলেন তিনি মুতাজিলা মতবাদ গ্রহণ করেছেন কি না। ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ.) অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে উত্তর দিলেন, ‘না, পবিত্র কোরআন হচ্ছে মহান আল্লাহর বাণী, কী করে কোরআনকে সৃষ্টি হিসেবে বিবেচনা করা সম্ভব?’ মামুন-অর-রশীদ ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁকে কারাগারে পাঠান।
খলিফা মামুন-অর-রশীদ ইন্তেকাল করলে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন খলিফা আল মুতাসিম। তিনিও ইমাম সাহেবকে কারাগার থেকে বের করে এনে পবিত্র কোরআনের সৃষ্টি সম্পর্কে মুতাজিলা মতবাদকে স্বীকার করেন কি না তা জানতে চান। ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ.) তখনো এ ভ্রান্ত মতবাদ গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানালেন।
খলিফা ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ.)-এর সঙ্গে যুক্তি প্রদর্শনের চেষ্টা করলেন। কিছু ধর্মীয় নেতাও খলিফার যুক্তি সমর্থন করে বিভিন্ন দলিল পেশ করলেন। কিন্তু ইমাম সাহেব প্রতিটি কথার দাঁতভাঙা জবাব দিলেন। তাঁর যুক্তি এবং অকাট্য সব দলিল দরবারি আলেমদের মুখে পেরেক ঠুকে দিচ্ছিল। অসহায়ের মতো এ ওর দিকে তাকাচ্ছিলেন। ইমামের এই আক্রমণাত্দক চেহারা দেখে মুতাজিলাদের সবচেয়ে কুটিল পৃষ্ঠপোষক প্রধানমন্ত্রী আবু দাউদ মুতাসিমকে উত্তেজিত করার জন্য বললেন_’আমিরুল মুমিনিন, এই লোকটি পথভ্রষ্ট আর অন্যকেও সে ভ্রষ্ট করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। আপনার সামনেই বসে আছেন আপনার রাষ্ট্রীয় ফকিহ্ ও বিচারকরা। আপনি এঁদের কাছেই জিজ্ঞেস করুন, দেখুন তাঁরা কী বলেন?’ তাঁরা যা বলবেন তা তো পরিষ্কার! তাঁরা সবাই একবাক্যে ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ.)-কেই গুমরাহ্ ও পথভ্রষ্ট বলে ফতোয়া দিলেন; কিন্তু ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ.) তাঁর দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করতে অস্বীকৃতি জানালেন। খলিফা মুতাসিম বিল্লাহ বললেন, ‘আহমাদ! তুমি আমার এই মত গ্রহণ করো, আমি তোমাকে আমার দরবারে বিশেষ মর্যাদার আসনে বসিয়ে দেব; তখন তুমি এমন লোকদের সঙ্গে ওঠাবসা করবে, যারা এই দামি কার্পেটের ওপর হাঁটতে পেরে গর্ব বোধ করে।’ ইমাম সাহেব বললেন_’বেশ, আমি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে আপনার প্রস্তাব গ্রহণ করলাম, কিন্তু আল্লাহর কিতাব এবং রাসুল (সা.)-এর হাদিস থেকে আপনাকে সমর্থনের দলিল দিতে হবে।’
0 Comments